দ্বিতীয় খণ্ড - ঊনবিংশ অধ্যায়: স্বজনবিয়োগ
ঐ বিষয়ে দৃষ্টান্ত
এক সময়ে মথুরবাবু শরীরের সন্ধিস্থলবিশেষে স্ফোটক হইয়া শয্যাগত হইয়াছিলেন। ঠাকুরকে দেখিবার জন্য ঐ সময়ে তাঁহার আগ্রহাতিশয় দেখিয়া হৃদয় ঐ কথা ঠাকুরকে নিবেদন করিল। ঠাকুর শুনিয়া বলিলেন, "আমি যাইয়া কি করিব, তাহার ফোড়া আরাম করিয়া দিবার আমার কি শক্তি আছে?" ঠাকুর যাইলেন না দেখিয়া মথুর লোক পাঠাইয়া বারংবার কাতর প্রার্থনা জানাইতে লাগিলেন। তাঁহার ঐরূপ ব্যাকুলতায় ঠাকুরকে অগত্যা যাইতে হইল। ঠাকুর উপস্থিত হইলে মথুরের আনন্দের অবধি রহিল না। তিনি অনেক কষ্টে উঠিয়া তাকিয়া ঠেস দিয়া বসিলেন এবং বলিলেন, "বাবা, একটু পায়ের ধূলা দাও।"
ঠাকুর বলিলেন, "আমার পায়ের ধূলা লইয়া কি হইবে, উহাতে তোমার ফোড়া কি আরোগ্য হইবে?"
মথুর তাহাতে বলিলেন, "বাবা, আমি কি এমনি, তোমার পায়ের ধূলা কি ফোড়া আরাম করিবার জন্য চাহিতেছি? তাহার জন্য তো ডাক্তার আছে। আমি ভবসাগর পার হইবার জন্য তোমার শ্রীচরণের ধূলা চাহিতেছি।"
ঐ কথা শুনিবামাত্র ঠাকুর ভাবাবিষ্ট হইলেন। মথুর ঐ অবকাশে তাঁহার চরণে মস্তকস্থাপনপূর্বক আপনাকে কৃতার্থ জ্ঞান করিলেন - তাঁহার দুনয়নে আনন্দাশ্রু নির্গত হইতে লাগিল।