দ্বিতীয় খণ্ড - ঊনবিংশ অধ্যায়: স্বজনবিয়োগ
ঐ বিষয়ে দৃষ্টান্ত
একদিন ঠাকুর ভাবাবিষ্ট হইয়া মথুরকে বলিলেন, 'মথুর, তুমি যতদিন (জীবিত) থাকিবে, আমি ততদিন এখানে (দক্ষিণেশ্বরে) থাকিব।' মথুর শুনিয়া আতঙ্কে শিহরিয়া উঠিলেন। কারণ তিনি জানিতেন, সাক্ষাৎ জগদম্বাই ঠাকুরের শরীরাবলম্বনে তাঁহাকে ও তাঁহার পরিবারবর্গকে সর্বদা রক্ষা করিতেছেন - সুতরাং ঠাকুরের ঐরূপ কথা শুনিয়া বুঝিলেন, তাঁহার অবর্তমানে ঠাকুর তাঁহার পরিবারবর্গকে ত্যাগ করিয়া যাইবেন। অনন্তর তিনি দীনভাবে ঠাকুরকে বলিলেন, 'সে কি বাবা, আমার পত্নী ও পুত্র দ্বারকানাথও যে তোমাকে বিশেষ ভক্তি করে।' মথুরকে কাতর দেখিয়া ঠাকুর বলিলেন, 'আচ্ছা, তোমার পত্নী ও দোয়ারি যতদিন থাকিবে, আমি ততদিন থাকিব!' ঘটনাও বাস্তবিক ঐরূপ হইয়াছিল। শ্রীমতী জগদম্বা দাসী ও দ্বারকানাথের দেহাবসানের অনতিকাল পরে ঠাকুর চিরকালের নিমিত্ত দক্ষিণেশ্বর পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। শ্রীমতী জগদম্বা দাসী ১৮৮১ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যুমুখে পতিতা হইয়াছিলেন।1 উহার পরে কিঞ্চিদধিক তিন বৎসর মাত্র ঠাকুর দক্ষিণেশ্বরে অবস্থান করিয়াছিলেন।
1. "Jagadamba died on or about 1st January, 1881, intestate, leaving defendant Trayluksha, then the only son of Mathura, her surviving." Quoted from Plaintiff's statement in High Court, Suit No. 203 of 1889.↩