Prev | Up | Next

পঞ্চম খণ্ড - পঞ্চম অধ্যায়: ঠাকুরের অহেতুক ভালবাসা ও নরেন্দ্রনাথ

নরেন্দ্রের পূর্ব-জীবনের অসাধারণ প্রত্যক্ষসমূহ - নিদ্রার পূর্বে জ্যোতিঃদর্শন

আমরা বলিয়াছি, অদ্ভুত পুণ্যসংস্কারসমূহ লইয়া শ্রীযুত নরেন্দ্র জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। সেজন্য অপর-সাধারণ হইতে ভিন্ন ভাবের প্রত্যক্ষসকল তাঁহার জীবনে নানা বিষয়ে ইতঃপূর্বেই উপস্থিত হইয়াছিল। দৃষ্টান্তস্বরূপে ঐরূপ কয়েকটির উল্লেখ করিলেই পাঠক বুঝিতে পারিবেন। নরেন্দ্র বলিতেন - "আজীবন, নিদ্রা যাইব বলিয়া চক্ষু মুদ্রিত করিলেই ভ্রূমধ্যভাগে এক অপূর্ব জ্যোতির্বিন্দু দেখিতে পাইতাম এবং এক মনে উহার নানারূপ পরিবর্তন লক্ষ্য করিতে থাকিতাম। উহা দেখিবার সুবিধা হইবে বলিয়া লোকে যেভাবে ভূমিতে মস্তক স্পর্শ করিয়া প্রণাম করে, আমি সেইভাবে শয্যায় শয়ন করিতাম। ঐ অপূর্ব বিন্দু নানা বর্ণে পরিবর্তিত ও বর্ধিত হইয়া ক্রমে বিম্বাকারে পরিণত হইত এবং পরিশেষে ফাটিয়া যাইয়া আপাদমস্তক শুভ্র-তরল জ্যোতিতে আবৃত করিয়া ফেলিত! - ঐরূপ হইবামাত্র চেতনালুপ্ত হইয়া নিদ্রাভিভূত হইতাম! আমি জানিতাম, ঐরূপেই সকলে নিদ্রা যায়। বহুকাল পর্যন্ত ঐরূপ ধারণা ছিল। বড় হইয়া যখন ধ্যানাভ্যাস করিতে আরম্ভ করিলাম তখন চক্ষু মুদ্রিত করিলেই ঐ জ্যোতির্বিন্দু প্রথমেই সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইত এবং উহাতেই চিত্ত একাগ্র করিতাম। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের উপদেশে কয়েকজন বয়স্যের সহিত যখন নিত্য ধ্যানাভ্যাস করিতে লাগিলাম, তখন ধ্যান করিবার কালে কাহার কিরূপ দর্শন ও উপলব্ধি উপস্থিত হইল, পরস্পরে তদ্বিষয়ে আলোচনা করিতাম। ঐ সময়ে তাহাদিগের কথাতেই বুঝিয়াছিলাম, ঐরূপ জ্যোতিঃদর্শন তাহাদিগের কখনও হয় নাই এবং তাহাদিগের কেহই আমার ন্যায় পূর্বোক্তভাবে নিদ্রা যায় না!"

Prev | Up | Next


Go to top