Prev | Up | Next

পঞ্চম খণ্ড - পঞ্চম অধ্যায়: ঠাকুরের অহেতুক ভালবাসা ও নরেন্দ্রনাথ

স্বামী প্রেমানন্দের প্রথম দিন দক্ষিণেশ্বরে আগমন ও ঠাকুরকে নরেন্দ্রের জন্য উৎকণ্ঠিত দর্শন

"স্বামী ব্রহ্মানন্দের সহিত হাটখোলার ঘাটে নৌকায় উঠিতে যাইয়া ঐদিন রামদয়ালবাবুকে তথায় দেখিতে পাইলাম। তিনিও দক্ষিণেশ্বরে যাইতেছেন জানিয়া আমরা একত্রেই এক নৌকায় উঠিলাম এবং প্রায় সন্ধ্যার সময় রানী রাসমণির কালীবাটীতে পৌঁছিলাম। ঠাকুরের ঘরে আসিয়া শুনিলাম, তিনি মন্দিরে ৺জগদম্বাকে দর্শন করিতে গিয়াছেন। স্বামী ব্রহ্মানন্দ আমাদিগকে ঐ স্থানে অপেক্ষা করিতে বলিয়া তাঁহাকে আনয়ন করিবার জন্য মন্দিরাভিমুখে চলিয়া গেলেন এবং কিছুক্ষণ পরেই তাঁহাকে অতি সন্তর্পণে ধারণ করিয়া 'এখানটায় সিঁড়ি, উঠিতে হইবে - এখানটায় নামিতে হইবে' ইত্যাদি বলিতে বলিতে লইয়া আসিতেছেন, দেখিতে পাইলাম। ইতঃপূর্বেই তাঁহার ভাববিভোর হইয়া বাহ্যসংজ্ঞা হারাইবার কথা শ্রবণ করিয়াছিলাম। এজন্য ঠাকুরকে এখন ঐরূপে মাতালের ন্যায় টলিতে টলিতে আসিতে দেখিয়া বুঝিলাম তিনি ভাবাবেশে রহিয়াছেন। ঐরূপে গৃহে প্রবেশ করিয়া তিনি ছোট তক্তপোশখানির উপর উপবেশন করিলেন এবং অল্পক্ষণ পরে প্রকৃতিস্থ হইয়া পরিচয় জিজ্ঞাসাপূর্বক আমার মুখ ও হস্ত-পদাদির লক্ষণপরীক্ষায় প্রবৃত্ত হইলেন। কনুই হইতে অঙ্গুলি পর্যন্ত আমার হাতখানির ওজন পরীক্ষা করিবার জন্য কিছুক্ষণ নিজহস্তে ধারণ করিয়া বলিলেন, 'বেশ'। ঐরূপে কি বুঝিলেন, তাহা তিনিই জানেন। উহার পরে রামদয়ালবাবুকে শ্রীযুত নরেন্দ্রের শারীরিক কল্যাণের বিষয় জিজ্ঞাসা করিলেন এবং তিনি ভাল আছেন জানিয়া বলিলেন, 'সে অনেকদিন এখানে আসে নাই, তাহাকে দেখিতে বড় ইচ্ছা হইয়াছে, একবার আসিতে বলিও।'"

Prev | Up | Next


Go to top