দ্বিতীয় খণ্ড - অনুরাগে কালীদর্শন
১৯
এইবার শ্রীপ্রভুর শিয়ড়ে গমন।
বড় পিয়ারের তাঁর হৃদুর ভবন॥
কামারপুকুর আর শিয়ড়ের স্থান।
মাইল পাঁচেক পথ মধ্যে ব্যবধান॥
একে কোমলাঙ্গ প্রভু তাহে বরিষায়।
গমনের সুব্যবস্থা হয় শিবিকায়॥
পল্লীগ্রামে মেঠো পথ তথাপি সুন্দর।
প্রকৃতির চিত্র-লেখা আছে বহুতর॥
মরি কি মধুর দৃশ্য আঁখি-বিমোহন।
নীলাম্বরাকাশ চন্দ্রাতপের মতন॥
বিস্তৃত ধানের ক্ষেত্র হরিৎ শ্যামল।
নবীন ধানের গাছ গুচ্ছাদিসকল॥
দোলাদুলি কোলাকুলি আন্দোলিত বায়।
ধীরে ধীরে গায় গীত তাদের ভাষায়॥
মাঝে মাঝে সরোবরে কাকচক্ষু জল।
শোভে তাহে শত শত ফুল্ল শতদল॥
গন্ধবহ বহে গন্ধ কমল-গৌরব।
মধুকরে মত্ত করে গুনগুন রব॥
ঊর্ধ্বে গতি বকপাঁতি অতীব বাহার।
নীলিমা শূন্যের গলে মুকুতার হার॥
প্রকৃতির প্রদর্শনী পল্লীর প্রান্তরে।
দেখেন বসিয়া প্রভু শিবিকা-ভিতরে॥
হেনকালে শ্রীপ্রভুর অপূর্ব দর্শন।
অপূর্ব ঠাকুর যেন অপূর্ব তেমন॥
বিশ্বাগার দেহ-মধ্যে প্রভুর আমার।
বাহিরে আসিল দুটি কিশোর কুমার॥
নয়ন-বিনোদ মূর্তি সুঠাম সুন্দর।
বয়ানে লাবণ্য-কান্তি জিনি শশধর॥
শিবিকার বহির্ভাগে প্রমত্ত খেলায়।
কভু মৃদুমন্দ কভু দ্রুতগতি যায়॥
কভু ছুটাছুটি-খেলা হাস্য পূর্ণাননে।
কভু হুটোপাটি বন্য-ফুল-আহরণে॥
কখন প্রান্তরে মাঠে বহু দূরে যায়।
কভু শিবিকার পাশে আসে পুনরায়॥
কভু বালকের মত বালক যেমন।
হাস্য-পরিহাসসহ কথোপকথন॥
এইরূপে বাল-চেষ্টা করি বহুতর।
প্রবেশিলা শ্রীপ্রভুর দেহের ভিতর॥