অ্যান্টনী সাহেব (ফিরিঙ্গী)
১
জয়া যোগেন্দ্রজায়া, মহামায়া মহিমা অসীম তোমার।
একবার দুর্গা দুর্গা দুর্গা ব'লে যে ডাকে মা তোমায়,
তুমি কর তায় ভবসিন্ধু পার।
মা, তাই শুনে এ ভবের কূলে,
দুর্গা দুর্গা দুর্গা ব'লে বিপদকালে
ডাকি, দুর্গা কোথায় মা, দুর্গা কোথায় মা;
তবু সন্তানের মুখ চাইলে না মা,
আমায় দয়া কোরলে না মা,
পাষাণে প্রাণ বাঁধলি উমা, মায়ের ধর্ম এই কি মা?
অতি কুমতি কুপুত্র ব'লে,
আপনিও কুমাতা হ'লে - আমার কপালে!
তোমার জন্ম যেমনি পাষাণ-কুলে,
ধর্ম তেমনি রেখেছ!
দয়াময়ী, আজ আমায় দয়া কোরবে কি মা,
কোন্ কালে বা কারে তুমি দয়া ক'রেছ!
জানি তোমার চরণ সাধন করি
ব্রহ্মা হ'লেন ব্রহ্মচারী - দণ্ডধারী;
দেখ, সকল ফেলে, ক্ষীরোদজলে ভাসলেন শ্রীহরি।
আবার শূন্য ক'রে সোনার কাশী, ওগো শ্যামা সর্বনাশী,
শিবকে ক'রে শ্মশানবাসী, সন্ন্যাসী তায় সাজিয়েছ।
নাম কেবল করুণাময়ী, করুণাশূন্য হয়েছ।
মা! তুমি দক্ষ-রাজকুমারী, দক্ষযজ্ঞে গমন করি,
যজ্ঞেশ্বরী যজ্ঞ হেরি নয়নে;
শিব-বিহনে, শিব-অপমানে,
মা সেই অভিমানে,
এমন সাধের যজ্ঞে ভঙ্গ দিলি, দক্ষরাজায় নিদয় হলি -
আপনি মলি, তারেও মেলি,
পিতার দুঃখ ভাবলি নে।
তখন যার অপমান শুনে কানে,
প্রাণ ত্যেজেছ বিষাদ মনে - দক্ষ-ভবনে,
আবার আপনি উমা কঠিন প্রাণে
তার বুকে পা দিয়েছ।
তুমি তার' তার' তার', না তার' না তার',
আপনার গুণে তরবো;
দুর্গা-নাম-তরী, মস্তকেতে করি,
যতন করিয়ে রাখবো।
আমার অন্তে শমন এলে, অজপা ফুরালে,
দুর্গা দুর্গা ব'লে ডাকবো।
মা, অসাধ্য তোমার সাধন, কোরলে সাধন,
কেবল তার নিধন হ'তে হয়।
একবার তারা ব'লে যে ডেকেছে, সেই ডুবেছে,
তারা তোমার ধারা তো মায়ের ধারা নয়।
মা, রাবণরাজা অন্তিমকালে, রঘুনাথের রণস্থলে,
দুর্গা ব'লে ডেকেছিল বদনে;
তবু তার পানে ফিরে চাইলি নে, তার দুঃখ ভাবলি নে,
তারে ধ্বংস ক'রে ভগবতী, নিদয় হলি ভক্তের প্রতি,
শেষকালে তার বংশে বাতি দিতেও কারে রাখলি নে॥
আগে ছিল না তার কোন শঙ্কা,
বাজাতো জয় কালীর ডঙ্কা - অতি তেজ ডঙ্কা,
আবার ছল ক'রে তার সোনার লঙ্কা
দগ্ধ ক'রে এসেছ।
দয়াময়ী মাগো,
কোন্ কালে বা কারে তুমি দয়া করেছ?
পাঠান্তর / পাঠভেদ:
জয়া যোগেন্দ্রজায়া, মহামায়া মহিমা অসীম তোমার।
একবার দুর্গা দুর্গা ব'লে যে ডাকে মা তোমায়,
তুমি কর তায় ভবসিন্ধু পার।
মা, তাই শুনে এ ভবের কূলে,
দুর্গা দুর্গা দুর্গা ব'লে বিপদকালে
ডাকি, দুর্গা কোথায় মা, দুর্গা কোথায় মা?
তবু সন্তানের মুখ চাইলে না মা,
আমায় দয়া কোরলে না মা,
পাষাণে প্রাণ বাঁধলি উমা, মায়ের ধর্ম এই কি মা?
অতি কুমতি কুপুত্র ব'লে,
আপনিও কুমাতা হ'লে - আমার কপালে।
তোমার জন্ম যেমনি পাষাণ কুলে,
ধর্ম তেমনি রেখেছ!
দয়াময়ী, আজ আমায় দয়া কোরবে কি মা,
কোন্ কালে বা কারে তুমি দয়া ক'রেছ!
জানি তোমার চরণ সাধনা করি
ব্রহ্মা হ'লেন ব্রহ্মচারী - দণ্ডধারী;
দেখ, সকল ফেলে, ক্ষীরোদজলে ভাসলেন শ্রীহরি।
আবার শূন্য ক'রে সোনার কাশী, ওগো শ্যামা সর্বনাশী,
শিবকে ক'রে শ্মশানবাসী, সন্ন্যাসী তায় সাজিয়েছ।
নাম কেবল করুণাময়ী, করুণাশূন্য হয়েছ।
মা! তুমি দক্ষ-রাজকুমারী, দক্ষযজ্ঞে গমন করি,
যজ্ঞেশ্বরী যজ্ঞ হেরি নয়নে;
শিব-বিহনে, মা শিব-অপমানে সেই অপমানে,
এমন সাধের যজ্ঞ ভঙ্গ দিলি, দক্ষরাজায় নিদয় হলি -
আপনি মলি, তারেও মেলি
পিতার দুঃখ ভাবলি নে।
তখন যার অপমান শুনে কানে
প্রাণ ত্যেজেছ বিষাদ মনে - দক্ষ-ভবনে,
আবার আপনি উমা কঠিন প্রাণে
তার বুকে পা দিয়েছ।
তুমি তার' তার' তার', না তার' না তার'
আপনার গুণে তরবো;
দুর্গা-নাম-তরী, মস্তকেতে করি
যতন করিয়ে রাখবো।
আমার অন্তে শমন এলে, অজপা ফুরালে
দুর্গা দুর্গা ব'লে ডাকবো।
মা, অসাধ্য তোমার সাধন, কোরলে সাধন,
কেবল তার নিধন হ'তে হয়।
একবার তারা ব'লে যে ডেকেছে, সেই ডুবেছে,
তারা তোমার ধারা তো মায়ের ধারা নয়।
মা, রাবণরাজা অন্তিমকালে, রঘুনাথের রণস্থলে,
দুর্গা ব'লে ডেকেছিল বদনে;
তবু তার পানে ফিরে চাইলি নে, তার দুঃখ ভাবলি নে,
তারে ধ্বংস ক'রে ভগবতী, নিদয় হলি ভক্তের প্রতি,
শেষকালে তার বংশে বাতি দিতেও কারেও রাখলি নে॥
আগে ছিল না তার কোন শঙ্কা,
বাজাতো জয় কালীর ডঙ্কা - অতি তেজ ডঙ্কা॥
আবার ছল ক'রে তার সোনার লঙ্কা
দগ্ধ ক'রে এসেছে।
দয়াময়ী মাগো,
কোন্ কালে বা কারে তুমি দয়া করেছ?