কৃষ্ণপ্রসন্ন সেন (পরিব্রাজক)
২
দুর্গা-নামে রয় না জীবের ভয়-ভাবনা।
ভয়-ভাবনা যম-যাতনা রয় না, ও নাম নাও রসনা।
নন্দী বলে, আমার শম্ভু যেন রজতগিরি,
জয়া বলে, গৌরী আমার সুবর্ণ-বল্লরী,
রূপে জগৎ আলো।
নন্দী বলে, আমার প্রভুর শিরে কাল-ফণী,
জয়া বলে মা'র নূপুরে ফণীর মাথার মণি,
শোভা বলবো কত!
নন্দী বলে, আমার শিবের ভস্ম গায়ে মাখা,
জয়া বলে, পাবে ব'লে আমার মায়ের দেখা,
ভোলা তাই উদাসী।
নন্দী বলে, শোভা পঞ্চ-বদনমণ্ডলে,
জয়া বলে, দুর্গা-নামের গুণ গাইবে ব'লে,
পাগল পঞ্চানন।
নন্দী বলে, আমার প্রভু জগতের পতি,
জয়া বলে, জগৎপতির মা আমার প্রসূতি,
আদ্যাশক্তি যে মা।
নন্দী বলে, রুদ্র আমার মহা-ত্রিশূলধারী,
জয়া বলে, ধরবে ব'লে মায়ের কাশীপুরী,
নৈলে থাকবে কোথা!
নন্দী বলে, আমার প্রভু সংসার সংহারে,
জয়া বলে, প্রকৃতি মা'র আজ্ঞা-অনুসারে,
শিব কর্বে বা কি?
নন্দী বলে, আমার শিবের কুবের ভাণ্ডারী,
জয়া বলে, মা'র দ্বারেতে সেই শিব ভিখারী,
অন্নপূর্ণা যে মা।
নন্দী বলে, আমার শম্ভু গরল খেয়েছিল,
জয়া বলে, দুর্গা-নামের গুণে বেঁচে গেল,
নীলকণ্ঠ তোদের।
নন্দী বলে, মহাকাল প্রভু যে আমার,
জয়া বলে, মহাকালী বুকের উপর তার,
শিব শবের আকার।
নন্দী বলে, শিব আমার শব কেন হইল,
জয়া বলে, মা যে শিবের শক্তি হ'রে নিল,
ইকার থাকলো না যে!
জয়ার কথা শুনে নন্দী স্তব্ধ হ'য়ে রয়,
পরিব্রাজক বলে, গাও সকলে দুর্গা-নামের জয়,
- যাবে রোগ শোক ভয়॥