নীলমণি পাটনী
১
নীলমণি পাটনীর দলে গীত।
মা হরারাধ্যা তারা তোমার নাম,
মোক্ষধাম তন্ত্রে শুন্তে পাই।
তাইতে তারা, তোমায় তারা, তারা তারা তারা বোলে
ডাকছি মা সদাই।
তুমি তারা, ত্বং ত্রিগুণধরা, অনন্ত ব্রহ্মাণ্ডের তারা,
তোমায় ধরা, সে ত' বিষম দায়।
তারা গো মা, কেবল ভক্তির ফল সাধনার ফলে,
ডাকি দুর্গা দুর্গা বোলে -
ধরেছিল ব্যাধের ছেলে, কালকেতু তোমায়।
এবার বেঁধেছি মন আঁটাআঁটি, কোরেছি মন খুব খাঁটি,
তারা গো মা, এবার ধোরেছি পাষাণের বেটি,
আর পালাতে পারবি নে।
তারা গো, আজ তারা-ধরা ফাঁদ পেতেছি মা, হৃদয়-কাননে।
আমায় বোলেছে সেই মহাকাল,
আছে গুরু মহাযন্ত্র-জাল,
সাধন-পথে সেই জাল পেতে থাকবো কিছু কাল -
এখন ভক্তি-ডোর কোরেছি হাতে,
তারা যদি যাস্ সে পথে,
ধোরবো মা তোর হাতেনাতে, বাঁধবো দুটি চরণে।
মন-কারাগারে তোমায় রাখবো মা অতি যতনে।
তোমায় লোকে দেয় নানা পূজা, ষোড়শোপচারে পূজা,
তেমন পূজা কোথা পাব বল,
তারা গো মা, কেবল গঙ্গাজল অঞ্জলি কোরে,
মানসে নৈবেদ্য কোরে, দিব মা তোর চরণ ধোরে,
নির্মল গঙ্গাজল।
আমি কোথা পাব অন্য বলি, মহিষাদি অজ বলি,
দিব ছয় রিপুকে নর-বলি, 'দুর্গা বোলে বদনে।
মা, এবার পালাবার পথ তোমার নাই,
উপায় নাই, সন্ধান নাই।
তারা ধোরবো বোলে তারা, মুদিয়ে পাপ-চক্ষের তারা,
রেখেছি জ্ঞান-চক্ষের তারা প্রহরী সদাই।
মা, কে জানে তোমার লীলে,
কি ছলে কোন্ ভাবেতে রও?
কোরে যতন বহু মতন,
ধন-ধান্য নানা রতন, দিলেও তুষ্ট নও।
তোমায় রাবণ সেই লঙ্কাপুরে, অতি যত্নে যত্ন কোরে,
পূজা কোরে সবংশেতে যায়।
তারা গো, আবার শ্রীমন্তে প্রসন্ন হোয়ে,
বিনা পূজায় আপনি গিয়ে, মশানেতে অভয় দিয়ে,
রক্ষা করলি তায়।
এখন পরমার্থ পরম ধনে, আছিস্ মা তুই পরম-ধনে,
তারা গো, তোমায় যে ভজেছে, সেই পেয়েছে,
ব্যাস লিখেছেন পুরাণে॥