রামকুমার নন্দী মজুমদার
১
বল মা তোমায় কি দিয়ে পূজি গো ব্রহ্মময়ী!
আমি দেখি না ব্রহ্মাণ্ডে কিছু আছে যে মা তোমা বৈ॥
ব্রহ্ম হ'তে পরমাণু, সকলি তোমার তনু,
মাগো, অন্য বস্তু ত্রিভুবনে তুমি বিনে আছে কৈ॥
বাঞ্ছা ছিল হৃদিপুরে, মানসিক উপচারে, পূজিব তোমারে ভবদারা,
আবার মনে মনে দেখলেম ভেবে, সে সকলও তুমি শিবে,
কিছুই যে নহে তুমি ছাড়া।
এই হৃদি-পদ্মাসন তোমার চির-আসন,
মাগো, বল তবে অন্যাসন অন্বেষণে পাব কৈ॥
কিসে হবে আচমন, কি দিয়ে করাব স্নান,
পাদ্য-অর্ঘ দিব কিসে আমি।
সহস্রার-চ্যুতামৃত তব পদ-বিগলিত, তাহে স্নান করিবে কি তুমি?
তোমার চরণামৃতে তোমারে দিব কি মতে মাগো,
কৈরে গঙ্গাপূজা গঙ্গাজলে ফলভাগী কিসে হই॥
আকাশাদি পঞ্চ তত্ত্ব, তুমি প্রাণ তুমি তত্ত্ব, ধূপ-দীপ-আদি দিব কিসে।
অমায়াদি পুষ্প যত, আছে সদা মুকুলিত, এ দেহ ত কভু না বিকাশে।
কাম-ক্রোধ দুই বলী, কেমন ক'রে দিব বলি, মাগো,
তা'রা আমা হ'তে মহাবলী, আমি তাদের সনে পারি?
কুমার বলে, আমার ভাগ্যে পূজা তো হ'ল না দুর্গে,
বাহ্য কি মানস-উপচারে।
এখন আছি কিনা আছি আমি, মনে ভেবে দেখ তুমি,
কে তবে পূজিবে মা তোমারে॥
আমার দেহ দেহী সকল তুমি, তবু কি আর র'লেম আমি, মাগো,
মিছা করি 'আমি' 'আমি', আমিও মা আমি নই॥