প্রথম খণ্ড - রঘুবীরের মালাগ্রহণ
৩
অযোধ্যা-সদৃশ এই কামারপুকুর।
যেইখানে বাল্যলীলা হৈল শ্রীপ্রভুর॥
তথায় বসতি করে যত নরনারী।
পশু-পাখী-তৃণ-আদি গুল্ম-লতা-করী॥
শ্রীপাদ-বন্দনা করি জুড়ি দুই করে।
পদরজ দিয়া রাখ অধম পামরে॥
তোমাদের গুণ-গাথা-মহিমা-বর্ণন।
করিতে সক্ষম কভু নহে এ অধম॥
কৃপা করি বারেক যদ্যপি দেখ হেরি।
তবে কিছু গুণ-গান করিবারে পারি॥
অধমের নাহি কোনমাত্র শক্তি-বল।
তোমাদের কৃপাকণা ভরসা সম্বল॥
গ্রামবাসী প্রতিবাসী নরনারীগণ।
গদা'য়ে বুঝেন যেন জীবন-মরণ॥
গদাই নিপুণ স্বতঃ সুমধুর স্বরে।
শিব-শ্যামাবিষয়ক গান করিবারে॥
অল্পবয়স শিশু অতি মিষ্ট স্বর।
যে শুনিত জুড়াইত তাহার অন্তর॥
নারী যত সমবেত লাড়ু দিয়া হাতে।
বলিতেন গদাধরে গান শুনাইতে॥
বিশেষে বিধবা যাঁরা গ্রামের ভিতরে।
যা পেতেন রাখিতেন গদা'য়ের তরে॥
গদাধরে ধরে লয়ে যাইত ভবন।
পথেঘাটে যেইখানে হয় দরশন॥
কত কি খাইতে দেন পরম যতনে।
সুতবেচা কড়ি দিয়া লাড়ু কিনে এনে॥
গদা'য়ে খাওয়াতে হ'ত এতদূর সাধ।
হতাশে গণিত হৃদে বিষম বিষাদ॥
প্রহরেক না দেখিলে বিদরয়ে বুক।
ব্রাহ্মণকুটিরে ছুটে দেখিবারে মুখ॥
হায় কে এসব নর-নারী-বেশে হেথা।
থাকিতে নয়ন খেনু নয়নের মাথা॥
দয়া করে দেহ খুলে দুখানি নয়ন।
জীবন সার্থক করি হেরিয়া চরণ॥