Prev | Up | Next

প্রথম খণ্ড - বিশালাক্ষীর আবেশ

বাল্যকালে বাল্য-খেলা কত শ্রীপ্রভুর।
গাইলে শুনিলে হৃদে আনন্দ প্রচুর॥
অতি সুমধুর কথা শুন শুন মন।
কামারপুকুরে প্রভু খেলিলা কেমন॥
অচিন্ত্য অব্যক্ত পূর্ণ ব্রহ্ম সনাতন।
বেদ-বিধি তন্ত্র-মন্ত্র আগম-নিগম॥
তপ-জপ যাগ-যজ্ঞ ক্রিয়াদির পার।
মন-বুদ্ধি-ইন্দ্রিয় অতীত সমাচার॥
সর্বশক্তিমান বিভু অখিলের পতি।
কটাক্ষে প্রলয় হয় কটাক্ষেতে স্থিতি॥
অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড হয় কটাক্ষে পালন।
অনাদি অনন্ত পরা দুঃসাধ্য সাধন॥
এদিকে পতিত-বন্ধু কৃপার সাগর।
অবতীর্ণ ধরাতলে ধরি কলেবর॥
মানুষের মত ঠিক আকৃতি গঠন।
শারীরিক ক্রিয়া-ধর্ম নরের মতন॥
সঙ্গে নর খেলাপর তাহাদের সনে।
সত্যই মানুষ যেন সাধ্য কার চিনে॥
কি বড় মধুর কথা আছে এর পর।
আকারে সচ্চিদানন্দ প্রভু সর্বেশ্বর॥
নরনারী যতসব গ্রামেতে বসতি।
সঙ্গে খেলিবারে বড় সবার পিরীতি॥
আদরে খাওয়ায় তাঁয় ল'য়ে সংগোপনে।
দেখা পেলে ধরে দেয় হাতে লাড়ু কিনে॥
গাঁথিয়া ফুলের মালা দেয় পরাইয়ে।
মত্তচিত গ্রামে যত বিশেষতঃ মেয়ে॥
গদাই সবার বড় আদরের ধন।
যা ইচ্ছা করেন কেহ না করে বারণ॥
বরঞ্চ আনন্দে ভরি হেরিত নয়নে।
যখন যা খেলা হয় যাহার ভবনে॥
আগাগোড়া শ্রীপ্রভুর দেখি এই রীতি।
যার সঙ্গে কথা বলে সেই পায় প্রীতি॥
মনোমোহনীয়া কথা নানা রসে ভরা।
শ্রীবদনে গুপ্ত যেন সুধার ফোয়ারা॥
মোহন মূরতি কিংবা কার্য কোন তাঁর।
কার সাধ্য ভুলে যদি দেখে একবার॥
দেখ যেন শ্রীপ্রভুর ভূমিষ্ঠ অবধি।
ঈশ্বর-প্রসঙ্গে হয় মহান সমাধি॥
দর্শন-শ্রবণে হৃদি ভরে যেত ভাবে।
ভাবময় মন ভাব-সিন্ধুনীরে ডুবে॥
অচৈতন্য বাহ্যশূন্য আঙ্গিক বিকার।
কভু আস্যে হাস্য কভু চক্ষে জলধার॥
এহেন অবস্থা দেখে প্রথমে প্রথমে।
ভূতে ধরে গদাধরে বুঝে লোকজনে॥
অনেকের নাহি আর পূর্ব বোধ এবে।
তারা জানে যান তিনি মহাভাবে ডুবে॥
মহাভাবে নিমগন এই তার মানে।
যখন যে দেব কিংবা দেবীমূর্তি মনে॥
আসিয়া উদয় হয় হৃদয়-মাঝারে।
সেই দেব-দেবীভাব তাঁর তায় স্ফুরে॥
উপমায় কহি শুন দুই বিবরণ।
প্রভু গদাইর লীলা অপূর্ব কথন॥

Prev | Up | Next


Go to top