Prev | Up | Next

প্রথম খণ্ড - কালীপূজা ও রমণীর বেশধারণ

শ্রীপ্রভুর বাল্যখেলা অতি মনোহর।
বয়ঃবৃদ্ধি-সহ দেহে লাবণ্য সুন্দর॥
গ্রামের বালক যত তিলেক না ছাড়ে।
দিবারাতি মহামেলা ব্রাহ্মণের ঘরে॥
ছোট বড় বয়সের সহচরগণ।
পূর্ববৎ একসঙ্গে সময় যাপন॥
নানা রঙ্গে ভ্রমে তারা শ্রীপ্রভুর সনে।
সবার সর্দার প্রভু সকলেই মানে॥
যখন যা হয় আজ্ঞা কভু নহে হেলা।
মহন্তের মঠে যেন আজ্ঞাবহ চেলা॥
কতই খেলেন প্রভু তা সবার সনে।
অমানুষী সব কেহ তত্ত্ব নাহি জানে॥
শ্রীরাম মল্লিক নামে গ্রামে একজন।
প্রভুর সঙ্গেতে ভাব বড়ই তখন॥
দিনে রেতে এক সাথে আহার-বিহার।
এক বিছানায় নিদ্রা নিত্য দোঁহাকার॥
লোকে জনে উভয়ের পিরীতি দেখিয়া।
পরিহাসে বলিতেন কৌতুক করিয়া॥
বিবাহ হইত এ'দুয়ের পরস্পর।
যদি কেহ হ'তো মেয়ে ইহার ভিতর॥
কম বেশী সকলের সঙ্গে ভালবাসা।
সঙ্গ-সহবাসে কারো না মিটে পিপাসা॥
লয়ে আসা ভালবাসা অপার অতুল।
যাহে গড়িলেন লীলা-খেলার দেউল॥
গুণনিধি সর্বগুণ তাঁহাতে বিরাজে।
কেহবা এগুণে কেহ অন্যগুণে মজে॥
গদাইর চিত্রকার্য এতই সুন্দর।
হতবুদ্ধি যাহে বড় বড় চিত্রকর॥
অবাক হইয়া রহে চিত্র দেখে যারা।
অনুরূপে ভাবে ঠামে প্রকৃত চেহারা॥
পঞ্চভূতে গড়া আগে এখন বিরাজে।
গদাইর চিত্রলেখা পটের কাগজে॥
বিধাতা যাঁহার গড়া তাঁহার মহিমা।
কে বল বর্ণিতে পারে তিল অণুকণা॥
মাটির প্রতিমা হাতে গড়ে গদাধর।
সুন্দর হইতে তেহ অধিক সুন্দর॥
ভাবে রূপে সুঠামে সুন্দর অবিকল।
দেখিলে না যায় চেনা মাটির নকল॥
চক্ষুদানে আঁখিতারা হেন দীপ্তিমান।
মৃন্ময় মূরতি হয় জীবন্ত সমান॥
নকলে আসল জ্ঞান চিত্রে হয় যাঁর।
তিনি আদ্যাশক্তি নিজে শক্তির ভাণ্ডার॥
যে শক্তির দেহে রহে সৃষ্টির আঁকুর।
তাঁহারই ঘন মূর্তি গদাইঠাকুর॥
গড়েন গদাই হাতে দেবীর প্রতিমা।
সঙ্গিগণ ল'য়ে হয় পূজা-আরাধনা॥
পুষ্পপত্র প্রয়োজন যেন লয় মনে।
আজ্ঞামাত্র সংগ্রহ করয়ে সঙ্গিগণে॥
সঙ্গিগণে কেহ কিছু বুঝিতে না পারে।
যা বলেন প্রভু, তারা তাই মাত্র করে॥
শ্রীপ্রভুর বাল্যখেলা অপূর্ব কথন।
খেলাছলে মহাকার্য হয় সমাপন॥

Prev | Up | Next


Go to top