Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - হলধারীর সঙ্গে রঙ্গ ও মথুরকে শিবকালী-রূপ-প্রদর্শন

একদিন প্রভুদেব শিবের মন্দিরে।
করেন মহিম্নঃস্তোত্র পাঠ ধীরে ধীরে॥
মহেশ-মাহাত্ম্যগাথা স্তোত্র বিরচিত।
তাহাতে শ্রীপ্রভুদেব হন ভাবান্বিত॥
তখন ভুলিয়া স্তব উচ্চৈঃস্বরে কন।
ওগো মহাদেব তব মহিমা-কথন॥
কেমনে কহিব আমি কি শক্তি আমার।
গণ্ড বেয়ে দুনয়নে বহে অশ্রুধার॥
শুনিয়া রোদনরোল যে যেখানে ছিল।
ব্যাপার জানিতে সেথা আসিয়া জুটিল॥
উন্মত্ত পাগল প্রভু তাহাদের চোখে।
রহস্য-কৌতুকবৎ দাঁড়াইয়া দেখে॥
নানাজনে কহে নানা উপহাস করি।
কেহ কয় আজি বড় কাণ্ড বাড়াবাড়ি॥
কেহ কয় এমন কোথাও নাহি দেখি।
কেহ বলে শিবের ঘাড়েতে চড়ে নাকি॥
কেহ কয় কাছে গিয়া সামালো সামালো।
হাত ধ'রে বাহিরেতে টেনে আনা ভাল॥
শুভযোগ শ্ৰীমথুর আজি এইখানে।
আসিছেন দ্রুতগতি কোলাহল শুনে॥
সসম্ভ্রমে ভৃত্যগণে ছেড়ে দিল বাট।
যেখানে জমিয়াছে মানুষের হাট॥
দেখিল মন্দিরমধ্যে গুণাকর রায়।
ভাবেতে বিভোরচিত্ত শিবমহিমায়॥
মথুর দেখিয়া চিত্র মুগ্ধ অতিশয়।
নীরব আলেখ্যবৎ দাঁড়াইয়া রয়॥
একজন কর্মচারী কহে যুক্তিমতে।
টানিয়া আনিতে দেবে মন্দির হইতে॥
বিরক্তিব্যঞ্জক স্বরে কহেন মথুর।
কার সাধ্য শ্রীঅঙ্গ পরশে শ্রীপ্রভুর॥
মাথার উপরে মাথা যে জনার আছে।
সেই যেন এ সময় যায় ওঁর কাছে॥
পশ্চাতে আসিল বাহ্য ভাব-অবসানে।
দেখেন লোকের হাট বসেছে পেছনে॥
তন্মধ্যে মথুরানাথ সবার অগ্রণী।
বালকের মত ত্রস্ত হ'য়ে গুণমণি॥
কহিলেন মথুরের মুখপানে চেয়ে।
করে কি ফেলেছি কিছু বেসামাল হ'য়ে॥
মথুর কহিল অগ্রে করিয়া প্রমাণ।
তুমি তো করিতেছিলে শিবস্তুতি গান॥
না বুঝিয়া কর্ম-মর্ম যদি কোনজনে।
তোমারে বিরক্ত করে সেই সে কারণে॥
সাবধানে সসতর্কে হেথা বহুক্ষণ।
দাঁড়াইয়া আছি আমি দ্বারীর মতন॥
ধন্য ধন্য শ্ৰীমথুর ধন্য ধন্য তুমি।
তোমার শাশুড়ী ধন্য রানী রাসমণি॥
তোমার গৃহিণী ধন্য জগদম্বা নাম।
তোমাদের যেহ কেহ সকলে প্রণাম॥

Prev | Up | Next


Go to top