Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - হলধারীর সঙ্গে রঙ্গ ও মথুরকে শিবকালী-রূপ-প্রদর্শন

শ্রীপদে অটলবৎ রাখিতে মথুরে।
ইষ্টরূপে দরশন দিলেন এবারে॥
শ্রীপ্রভুর আবাস-মন্দির যেইখানে।
তাহার কিঞ্চিৎ দূর পূর্বোত্তর কোণে॥
আছয়ে বারাণ্ডা এক অতি সুশোভন।
পূর্ব-পশ্চিমেতে লম্বা দীর্ঘ আয়তন॥
তদুত্তরে ফুলের বাগান মনোহর।
নানাজাতি ফুটে ফুল সৌরভ বিস্তর॥
তাহার পূরব-ভাগে বাবুদের কুঠি।
দক্ষিণে সোপানাবলী অতি পরিপাটি॥
ভক্তবর শ্ৰীমথুর বসিয়া সোপানে।
নানাবিধ করে চিন্তা একাকী আপনে॥
হেনকালে শ্ৰীমথুর দেখিবারে পায়।
আপনে আপুনি মগ্ন প্রভুদেব রায়॥
বারাণ্ডায় পাদ চালি এধার ওধার।
কাহারও উপরে লক্ষ্য মোটে নাহি তাঁর॥
পশ্চিমাস্যে যে সময় শ্রীপ্রভুর গতি।
সে সময় দেবদেব মহেশ-মূরতি॥
পূর্বাস্যে যখন প্রভু ফিরেন আবার।
তখন মোহিনী-ঠামা প্রতিমা শ্যামার॥
গড়ন আকৃতি ঠিক সমতুল সাজে।
অবিকল যেন দেবী মন্দিরের মাঝে॥
শিবকালী যুগ্মরূপ প্রভুর শরীরে।
ভাগ্যবান শ্ৰীমথুর দেখে বারে বারে॥
মথুর প্রথমে বুঝে আঁখির বিকার।
পূর্ববৎ তাই যত দেখে বারংবার॥
আনন্দ-উচ্ছ্বাস হৃদে এত বলবতী।
মথুর হইল যাহে ধৈরয-বিচ্যুতি॥
দ্রুতগতি উপনীত প্রভুর নিকটে।
ধরিয়া চরণপদ্ম কাঁদে আর লুটে॥
ঠাকুর বলেন হেন করিতে যে নাই।
তুমি গণ্য মান্য বাবু রানীর জামাই॥
অপরে দেখিলে পরে কি কবে তোমায়।
এত বলি সান্ত্বনা করেন প্রভুরায়॥
তখন কি শুনে কথা কাঁদিয়ে কাঁদিয়ে।
বারংবার পদদ্বয় ধরে জড়াইয়ে॥
তবে জিজ্ঞাসিল প্রভু হেন কি কারণ।
বৃত্তান্ত খুলিয়া কহ করিব শ্রবণ॥
মুখে না বেরায় বাণী গদ্গদ স্বরে।
আমূল দর্শন যাহা কহিল গোচরে॥
শ্রীপ্রভু বলেন একি কথা কহ তুমি।
কি জানি আমি তো বাবু কিছুই না জানি॥
মথুর না শুনে কথা মুখপানে চায়।
ধরিয়া অভয় পদ অবনী লুটায়॥
নানা মতে বুঝাইতে তবে তারপর।
ক্রমে ক্রমে ধীরে ধীরে শান্ত ভক্তবর॥
করজোড় করি কহে বুঝিনু সকল।
সত্যই ফলিল মোর ঠিকুজির ফল॥
মথুরের ঠিকুজিতে লেখা হেন কথা।
সশরীরে সঙ্গে রবে তার ইষ্ট মাতা॥
প্রত্যক্ষ করিয়া আজি ঠিকুজির ফল।
শ্রীপদে উপজে ভক্তি বিশ্বাস অটল॥
দুঁহু-সঙ্গে দোঁহাকার সম্বন্ধ মধুর।
সেবক ভাণ্ডারী সখা মন্ত্রী শ্ৰীমথুর॥
প্রভুরও অপার কৃপা মথুরের প্রতি।
ত্রাতা পাতা রক্ষাকর্তা দুকালের গতি॥

Prev | Up | Next


Go to top