Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - স্বদেশ-যাত্রা

১১

পরদিন চুপে চুপে অতি প্রাতে উঠি।
প্রভুরে লইয়া যায় জয়রামবাটী॥
আনন্দের ওর নাই প্ৰতিবাসিগণে।
গদাই জামাই আসিছেন বার্তা শুনে॥
এগিয়া যাইয়া পথে যত নারীগণ।
বারে বারে বন্দি আমি সবার চরণ॥
আনিলেন আলয়েতে প্রভু গুণমণি।
পথে পথে জলধারা-সহ শঙ্খধ্বনি॥
জামাই আনিতে নাই দেশে হেন রীতি।
জলধারা শঙ্খধ্বনি অদ্ভুত ভারতী॥
কিভাবে করিল হেন রমণীর গণ।
প্রভুর আগমন-দিনে বিধান নূতন॥
ভক্তির মূলক নহে মঙ্গল-আচার।
প্রভুদেব ক্ষিপ্তপ্রায় জ্ঞান সবাকার॥
নাহি রামকৃষ্ণ-ভক্তি কিছুই এখানে।
বিষয়ী বিষয়ে মত্ত চাষা যত গ্রামে॥
রক্ষা কর কৃপাময়ী জগৎজননী।
তুমি মা লেখাও পুঁথি তাই লিখি আমি॥
মা তোমার জন্মভূমি মহাতীর্থধাম।
জড় কি চেতন তথা সকলে প্রণাম॥
ভাগ্যবান ভাগ্যবতী নরনারীগণ।
হেলায় দুবেলা দেখে অভয়চরণ॥
নাহি রামকৃষ্ণভক্তি নাম নাহি লয়।
এবা কিবা ভাব ভেবে হয়েছি বিস্ময়॥
বিশুষ্ক হৃদয়ভাব ভাব-দরশনে।
কি খেলা বুঝায়ে দেহ সুমূর্খ-সন্তানে॥
জগতের চাঁদা মামা তাহার কিরণ।
সমভাবে সকলের উপর পতন॥
পূজ্য হেয় স্থানাস্থান বিচারবিহীনে।
তেমতি আনন্দময় শ্রীপ্রভু যেখানে॥
পূর্ণানন্দ নিজে প্রভু আনন্দ-আধার।
যথায় উদয় তথা আনন্দ-বাজার॥
নারীগণে দরশনে রসভাষে তাঁয়।
প্রভু নাহি দেন কান কোনই কথায়॥
মুখে শ্যামাগুণগান তালি দেয় কর।
নৃত্য করে পদদ্বয় বড়ই সুন্দর॥
বদনমণ্ডলে শোভা অপরূপ খেলে।
বুক বেয়ে কোঁচার কাপড় কাঁধে ঝুলে॥
দেখিয়া সকলে ভুলে কাছে যতক্ষণ।
অন্তরালে গেলে বলে পাগল-লক্ষণ॥

Prev | Up | Next


Go to top