দ্বিতীয় খণ্ড - স্বদেশ-যাত্রা
১৫
বহু যত্নে সাঙ্গ যদি হইল ভোজন।
পশ্চাৎ ঘটিল আর অদ্ভুত ঘটন॥
অল্পদূর ব্যবধান ইষ্টেশানে যেতে।
তার মধ্যে মলত্যাগে বসিলেন পথে॥
কি এক কণ্টক তার নাম নাহি জানি।
পূজিলে তাহায় বড় তুষ্ট শূলপাণি॥
মলভূমে অগণন কণ্টকনিচয়।
নেহারিয়া শ্রীপ্রভুর প্রীতি অতিশয়॥
তাঁহার করম কার্য বুঝা মহাদায়।
কণ্টক লইয়া মত্ত হইলা পূজায়॥
আবেশে মহেশ-পদে কণ্টক-প্রদান।
দেখিয়া হৃদুর হয় আকুল পরাণ॥
পূজার মরম-কথা হৃদু নাহি জানে।
কত ডাকে মত্ত প্রভু কেবা ডাক শুনে॥
এক সাধনেতে সিদ্ধ হইবার তরে।
দীর্ঘবয়ঃ মহাঋষি বনের ভিতরে॥
কাটায় জীবন গোটা সহি যত ঋতু।
অশন গলিত পত্র প্রাণরক্ষা-হেতু॥
তবু নহে সিদ্ধকাম শেষে ফেঁসে যায়।
মরম অধিকে পঞ্চভূতেতে মিশায়॥
তেমন দুষ্কর ব্রত কতই সাধন।
হাতে হাতে অবহেলে যাঁর সমাপন॥
প্রেমিক রসিকবর ভক্তির মূরতি।
মাথায় প্রবাহ জ্ঞান-গঙ্গা দিবারাতি॥
কামিনী-কাঞ্চন-মায়া অবিদ্যা মোহিনী।
তুচ্ছ হেয় ঘৃণ্য যেন নরকের কৃমি॥
দিব্য পবিত্রতা-রূপ শুদ্ধসত্ত্বময়।
হরিতত্ত্ব দিবারাত্র হৃদয়ে উদয়॥
জীবহিত সদাব্রত কল্যাণ-আচার।
মোহনীয়া ঠাম পরা পুরুষ-আকার॥
তিনি কেন শিশুসম মলভূমে ব'সে।
কিবা বুদ্ধিবলে বল বুঝিবে মানুষে॥