রামপ্রসাদ সেন (কবিরঞ্জন)
২৩৮
কালেংড়া - ঠুংরী।
হের কার রমণী নাচে রে ভয়ঙ্করী বেশে।
কে রে, নব-নীল-জলধর-কায় হায় হায়,
কে রে হর-হৃদি-হৃদ পদে দিগবাসে॥
কে রে, নির্জনে বসিয়া নির্মাণ করিল,
পদ রক্তোৎপল জিনি,
তবে কেন রসাতলে যায় ধরণী,
হেন ইচ্ছা করে, অতি গাঢ় ক'রে, বাঁধি প্রেম-ডোরে,
রাখি হৃদি-সরোবরে হিল্লোলে ভাসে॥
কে রে নিন্দিত রামকদলীতরু, হেরি উরু
দর দর রুধির ক্ষরে,
যেন নীরদ হইতে নির্গত চপলে;
অতি রোষবলে, ভুজঙ্গম-দলে, নাভি-পদ্মমূলে,
ত্রিবলীর ছলে দংশিল এসে॥
কে রে উন্নত কুচকলি, মুখ-শতদলে অলি,
গুণ গুণ করিয়া বেড়ায়;
যেন বিকশিত সিতাম্ভোজ বনরোহায়,
কিবা ওষ্ঠশোভা, অতি লোল জিহ্বা হর-মনোলোভা,
যেন আসব-আবেশে শিশু সুধা ভাসে॥
কে রে, কুন্তলজাল-আবৃত মুখমণ্ডল;
লম্বিত চুম্বি ধরায় তাহে ভুরু-ধনুর্বাণ সন্ধান করা;
অর্ধচন্দ্র ভালে, সিঁতি মুহু দোলে, কি চকোর খেলে,
কিবা অরুণকিরণে গজমতি হাসে॥
কত দুন্ধবা দুন্ধবী, নাচিছে ভৈরবী,
হি হি করিছে যোগিনী,
কত কটরা ভরিয়া সুধা যোগায় অমনি,
রামপ্রসাদ ভণে, কাজ নাই রণে, এ বামার সনে,
যাঁর পদতলে শবছলে আশুতোষে॥