Prev | Up | Next

প্রথম খণ্ড - গোচারণ

সাধারণ বালকের খেলা যেই মত।
সে খেলা খেলিতে তাঁর ভাল না লাগিত॥
প্রান্তরে অন্তর হ'য়ে কোন বৃক্ষমূলে।
মনোমত খেলা ল'য়ে যতেক রাখালে॥
ব্রজ-খেলা গদায়ের হয় যেন মনে।
সেই সেই মত খেলা হয় সঙ্গী-সনে॥
সুবল হইত কেহ, কেহ বা শ্রীদাম।
কেহ হইতেন দাম, কেহ বসুদাম॥
আপনি কানাই তাই কানাইর বেশে।
কাছে কত গরু গাই চ'রে চ'রে আসে॥
কভু ছিঁড়ি দূর্বাদল খাওয়ান গোধনে।
কখন দোলেন ডালে বৃক্ষ-আরোহণে॥
ডাঙায় বসন রাখি নামিতেন জলে।
খেলিতেন লয়ে যত রাখাল সকলে॥
দূর মাঠে যেতে মানা করে পিতামাতা।
গদাধর কোনমতে না শুনেন কথা॥
পথে ঘাটে চারিভিতে বালকের সহ।
খেলিয়া বেড়ান গদাধর অহরহ॥
বড়ই মধুর কথা মাঠে গোচারণ।
যতদূর জানি বলি শুন শুন মন॥
পাড়াগেঁয়ে রাখালের এই রীতি চলে।
ছাড়ি গরু লয় মুড়ি আঁচলে আঁচলে॥
গ্রাম থেকে মাঠে কিবা বনে লয়ে যায়।
একত্রে রাখালগণে জলপান খায়॥
আনন্দের ওর যত না যায় বাখানি।
খেতে খেতে নাচে কত, করে কত ধ্বনি॥
একদিন খায় মুড়ি যতেক রাখালে।
গদাই লইয়া সঙ্গে কোন বৃক্ষমূলে॥
পরস্পর জলপান কাড়াকাড়ি করে।
তাহা দেখি গদাইয়ের ব্রজভাব স্ফুরে॥
একেবারে ভবসিন্ধু উথলি উঠিল।
ভাবাবেশে বাহ্যজ্ঞান এবে ছেড়ে গেল॥
দেখিয়া রাখালবৃন্দ চিন্তাকুল মন।
গদাই গদাই বলি ডাকে ঘন ঘন॥
সবে অতি শিশুমতি কিছুই না জানে।
বুদ্ধিশূন্য দেখে অন্যে চেয়ে চারি পানে॥
কেহ বা আনিয়ে জল কাপড় ভিজায়ে।
সজল বসনে দেয় বদন মুছায়ে॥
মাঝে মাঝে গদাধরে ভূতে ধরে জানে।
সেই হেতু রাম নাম বলে যত জনে॥
কিছু পরে চাহিলেন চক্ষু দুটি মেলে।
পরাণ পাইল দেখি রাখাল সকলে॥
সবে কহে কেন হেন হইল গদাই।
চক্ষে জল অবিরল মুখে কথা নাই॥
হাত দুটি ঘন ঘন কেন কেঁপে উঠে।
দেখে আমাদের বুদ্ধি নাহি রহে ঘটে॥
গরু চরাইতে আর আনিব না তোরে।
একাকী থাকিও তুমি আপনার ঘরে॥

Prev | Up | Next


Go to top