প্রথম খণ্ড - পাঠশালে অধ্যয়ন
৩
গুরুমহাশয় করে বিশেষ যতন।
গদাই শিখেন যাতে লিখন-পঠন॥
বিদ্যায় উদাস বড় না হয় উন্নতি।
কিছুই না কন, তাঁর দেখিয়া প্রকৃতি॥
কাঠাকে পর্যন্ত শেষ, লোকমুখে শুনি।
সরল-বানান-ক্ষম আমি ভাল জানি॥
তেরিজ পর্যন্ত অঙ্কে, যারে বলে যোগ।
আর নাহি পারিলেন শিখিতে বিয়োগ॥
স্বভাবতঃ যোগে মন তাই যোগ হ'ল।
অধম বিয়োগ, তাহে বুদ্ধি বেঁকে গেল॥
পূর্ণ থেকে পূর্ণ গেলে পূর্ণ থাকে যাঁর।
কেমনে বিয়োগে বুদ্ধি আসিবে তাঁহার॥
এ বড় সুগূঢ় অঙ্ক, অঙ্ক-শাস্ত্রে নাই।
বুঝিতে এসব তত্ত্ব সৎবুদ্ধি চাই॥
বাদ দিলে পূর্ণ-ব্রহ্ম, পূর্ণ-ব্রহ্ম হ'তে।
তথাপিও সেই পূর্ণ ব্রহ্ম থাকে হাতে॥
মহাব্যয়ে পুষ্টি-সৃষ্টি বিশ্ব চরাচর।
জমায় বাকিতে তবু একরূপ দর॥
জমারূপে পূর্ণ-ব্রহ্ম বিভু সনাতন।
ব্যয়রূপে বিরাট মূরতি অগণন॥
বাকিতলে তাই মিলে যেমন জমায়।
সেহেতু বিয়োগবুদ্ধি না আসে মাথায়॥
লোকে না বুঝিতে পারে এতেক খবর।
বুঝে মাত্র শিখিতে না পারে গদাধর॥
হিসাব-নিকাশে বুদ্ধি আদতেই নাই।
চোখে দিয়া ধূলা, খেলা খেলেন গদাই॥
অঙ্ক দিলে, তায় ফেলে, প্রভু গুণধাম।
তালপাতে লিখিতেন ঠাকুরের নাম॥