Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - পুরী-প্রতিষ্ঠা

স্নানযাত্রা সেইদিন আষাঢ় মাহায়।
বারশত ঊনষট্টি সাল গণনায়॥
পুরী-প্রতিষ্ঠার দিন যত কাছে আসে।
চারিদিকে নরনারী মহানন্দে ভাসে॥
মহতী হইবে ঘটা দেখিবার আশ।
ঘটা-পরিসীমা কথা না হয় প্রকাশ॥
দৈর্ঘ্যে প্রস্থে পুরীখানি মহা পরিসর।
আধলক্ষ লোক ধরে ইহার ভিতর॥
সুন্দর শোভিত এই পুরীর সমান।
কোন স্থলে গঙ্গাকূলে নাই বিদ্যমান॥
মন-প্রাণ কোথা যায় পুরী-দরশনে।
বলিতে নারিনু ভাব রয়ে গেল মনে॥
দিব্যভাব-পরিপূর্ণ শান্তিময় স্থল।
আজন্ম সন্তপ্ত চিত দেখিলে শীতল॥
আসিতে লাগিল কত শত শাস্ত্রবিৎ।
ছাত্রসহ নিমন্ত্রিত টোলের পণ্ডিত॥
মহাভাগ্যবতী রানী ভুবন-মাঝার।
শুভক্ষণে সমাগত শ্রীরামকুমার॥
সহোদর গদাধর আইলা সংহতি।
ভুবন-পাবন ত্রাতা অখিলের পতি॥
একত্রিত লোক কত সংখ্যা কেবা করে।
এত বড় পুরীখান তাহে নাহি ধরে॥
গণনায় সংখ্যা তার নাহি হয় সীমা।
যে দিনে সাজায় কৃষ্ণ কালীর প্রতিমা॥
রজত-কাঞ্চনময় নানা আভরণ।
পরায় শ্যামায় যত পুরীর ব্রাহ্মণ॥
রজত সহস্রদল পদ্মের উপর।
বিরাজিতা শ্যামামাতা পদতলে হর॥
পরম সুঠাম হেন নাহি কোনখানে।
শ্যাম কি শ্যামার মূর্তি সাধ্য কার চিনে॥
অতুল উপমা রূপ কান্তি প্রতিমার।
শ্যাম-অঙ্গে শোভে যেন শ্যামা-অলঙ্কার॥
এ-সময় বহু কষ্টে প্রভু গদাধর।
জনতা ঠেলিয়া যান মন্দির-ভিতর॥
প্রতিমা প্রতিমা বলি জ্ঞান নাহি হয়।
দেখিলা যেমন শ্যামা আপুনি উদয়॥
কৈলাস করিয়া শূন্য বিরাজ মন্দিরে।
অপরূপরূপে গোটা পুরী আলো করে॥
অন্নপূর্ণা-ক্ষেত্রে যেন নাহি অনাটন।
চর্ব্য-চুষ্য-লেহ্য-পেয় খায় লোকজন॥
আহূত কি অনাহূত দুঃখী ক্ষুধাতুর।
সমভাবে পায় সবে প্রচুর প্রচুর॥

Prev | Up | Next


Go to top