Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - অনুরাগে কালীদর্শন

ধ্যানের সময় কি দেখেন শুন মন।
কুয়াসার মত হয় প্রথম দর্শন॥
দ্বিতীয় দর্শন তাঁর অপূর্ব আখ্যান।
খদ্যোৎমণ্ডিত বাসে সৃষ্টি শোভমান॥
তৃতীয় দর্শন চন্দ্র দিনেশের কর।
শেষ মনোহর দৃশ্য জ্যোতির সাগর॥
যখন জ্যোতির মধ্যে হইতেন লীন।
সে সময় জড়-অঙ্গ বাহ্যজ্ঞানহীন॥
দেহ-ভাব-জ্ঞান-লোপ দেহে নাই মন।
সিন্ধুর সিন্ধুর সঙ্গে যেন সমাগম॥
এদিকে ভাবের রাজ্যে দরশন কত।
শ্রীবয়ানে আনন্দের আভা বিভাসিত॥
উন্মীলিত আঁখি কভু সহজের প্রায়।
জীবন্ত প্রতিমা কত দেখে প্রভুরায়॥
সম্বল রোদন বল প্রভু-অবতারে।
লীলা অঙ্গীভূত যত সাধনা-সমরে॥
শুন অপরূপ লীলা প্রভু একদিন।
পঞ্চবটীতলে গঙ্গাকূলে সমাসীন॥
চক্ষুর সীমায় যত সব নিরীক্ষণ।
পঞ্চবট গঙ্গাতট বৃক্ষলতাগণ॥
পরিষ্কার নীলাকাশ প্রকৃতির খেলা।
ধ্যানস্থ নহেন আছে আঁখি দুটি খোলা॥
এমন সময় হয় দৃষ্টির গোচর।
অতি অনির্বচনীয় সর্বাঙ্গ সুন্দর॥
জ্যোতির্ময়ী মানবী মূরতি নিরুপমা।
জীবন্ত মন্থর-গতি কনক-প্রতিমা॥
আলোকিত করি স্থান বিজলী ভাতিয়ে।
আসিছেন প্রভুদেব যেখানে বসিয়ে॥
অনিন্দ্য ভুবনে হেন নাহি উপমায়।
বিষাদ-কলঙ্ক কিন্তু মুখচন্দ্রিমায়॥
দেখিয়া শ্রীপ্রভুদেব চিন্তে মনে মনে।
কেবা ইনি কি কারণ আসিছে এখানে॥
এমন সময় কিবা আশ্চর্য কথন।
উপ্ শব্দে হনু এক দিল দরশন॥
নিপতিত পদতলে হইল তাঁহার।
কে যেন বলিল এই মূরতি সীতার॥
মা বলিয়া কাছে প্রভু যাইতে যাইতে।
অমনি মিশিল আসি প্রভুর অঙ্গেতে॥
রামকৃষ্ণ-লীলা অতি বিচিত্র কথন।
সাধনার আগে এই প্রথম দর্শন॥
এ গাছের গুঁড়ি নীচে ঊর্ধ্বদেশে মূল।
সর্ব-অগ্রে ফল হয় তার পরে ফুল॥
আজীবন শ্রীপ্রভুর এত দুঃখ কেনে।
মূল তার সীতা দেখা সবার প্রথমে॥
জনমদুঃখিনী সীতা রামায়ণে গায়।
স্ত্রীলোকের সীতা নাম নাহিক কোথায়॥
শ্রীমুখে বলিয়াছিলা জগৎ-গোসাঁই।
সীতা দেখি আগোটা জীবনে দুঃখ পাই॥

Prev | Up | Next


Go to top