দ্বিতীয় খণ্ড - অনুরাগে কালীদর্শন
৫
কোন দিন মা মা বলি সম্বোধি শ্যামায়।
কহেন কাকুতি করি হৃদি-বেদনায়॥
বিদরিছে হিয়া মাগো তোমারে না হেরি।
দুঃখী ছেলে কেঁদে বুলে দেখ দয়া করি॥
রামপ্রসাদেরে কৃপা কেমনে করিলে।
আমি কি কেহই নই সেই একা ছেলে॥
কোন দিন পূজা সাঙ্গে শ্যামাগুণগান।
করিয়া হইত তাঁর আকুল পরাণ॥
ভাসিয়া যাইত বক্ষ নয়নের জলে।
কাকুতি-মিনতি কত শ্যামা-পদতলে॥
বিরহ-যাতনা এত কে করে কিনারা।
অবশেষে হইতেন বাহ্যজ্ঞানহারা॥
অদৃষ্ট অপূর্ব শ্যামাপূজার ব্যাপার।
বিধিশাস্ত্র নাহি জানে কোন সমাচার॥
হৃদয়-সহিত যত ব্রাহ্মণে মিলিয়া।
বাহিরে আনিত ধরি পীড়িত বুঝিয়া॥
দুই-তিন-ঘণ্টা-কাল এ হেন ধরন।
ক্রমশঃ হইত পরে বাহ্যিক চেতন॥
সে সময়ে বোধ হয় তাঁহারে দেখিলে।
ঠিক যেন কাঁচা-ঘুমে তোলা শিশুছেলে॥
অবশ অবশ তনু না ধরে চরণ।
শ্রীমুখে কেবলমাত্র মা মা উচ্চারণ॥
এ হেন অবস্থা দেখি কি বুঝিবে নরে।
কি ভাবে এ ভাব তাঁর হৃদয়-ভিতরে॥
লোকের কি আছে সাধ্য বুঝে হেন ভাব।
বুঝিবে আপনি ধরি যেমন স্বভাব॥
উদয় বিবিধ ভাব হয় পূজাকালে।
অশ্রুত অদৃষ্ট তাই লোকে ক্ষেপা বলে॥
ভক্তিমতী রাসমণি জামাতা মথুর।
বুঝিল পাগল-ভাব হয়েছে প্রভুর॥
কিন্তু তাঁরা শ্রদ্ধা-ভক্তি প্রভুদেবে করে।
তাঁর সঙ্গে ভালবাসা ভিতরে ভিতরে॥
প্রভুর দুঁহার প্রতি করুণা অপার।
পাগল নহেন তিনি এই সমাচার॥
বুঝাইয়া দিত স্বরূপত্ব-প্রদর্শন।
শুন রামকৃষ্ণ-কথা অমৃত-কথন॥