Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - অনুরাগে কালীদর্শন

শ্রীবদনে শ্যাম-শ্যামা-বিষয়ক গীত।
মিষ্টতার তুলনায় কি ধরে অমৃত॥
এত মিঠে একবার যেবা শুনে কানে।
দিবারাতি গীত শুনি এই হয় মনে॥
সঙ্গীত-শ্রবণে রানী মহাভাগ্যবতী।
হৃদয় পুরিয়া পায় অতুল পিরীতি॥
একদিন প্রভুদেবে শ্যামার মন্দিরে।
মিনতি করিয়া কয় গান গাইবারে॥
প্রভুর মধুর কণ্ঠ পিক-কণ্ঠ জিনি।
শ্যামা-বিষয়ক গীত ধরিলা অমনি॥
শুনিতে শুনিতে রানী সচঞ্চলমনা।
অনেক টাকার এক বড় মকদ্দমা॥
উপস্থিত আদালতে নিষ্পত্তি না হয়।
চিন্তা করে অন্তরেতে কেমনে হবে জয়॥
সর্বঘটবার্তাবিৎ শ্রীপ্রভু ঈশ্বর।
অন্যমনা জানি হানে রানীরে চাপড়॥
অঙ্গুলি নির্দেশ করি দেখাইলা তায়।
ঐ দেখ ঐ দেখ সাক্ষাৎ শ্যামায়॥
সম্মুখে অতুলা মূর্তি প্রতিমা শ্যামার।
একদৃষ্টে দেখে মুখে কথা নাহি আর॥
দর দর অশ্রুধারা ঢালে দু নয়ন।
কি জানি কি দেখি করে অশ্রু-বিসর্জন॥
কি দেখাইলা প্রভুদেব হানিয়া চাপড়।
বুঝিবে শুনহ কিবা হৈল অতঃপর॥
চাপড়ের সঙ্গে হয় শকতি-সঞ্চার।
যাহাতে ফুটিল আঁখি রানীর এবার॥
হৃদিগত ভাব কভু নাহি থাকে চাপা।
ভ্রম দূর বুঝে প্রভুদেব নহে ক্ষেপা॥
পুরীর ভিতরে যত অপর ব্রাহ্মণ।
প্রভুদেবে দ্বেষহিংসা করে বিলক্ষণ॥
রানীরে হানিতে চড় বিলোকন করি।
অন্তরে যতেক প্রভু-দ্বেষী খুশী ভারি॥
রানীরে চাপড় হানা সোজা কথা নয়।
বড় বড় জমিদারে যারে করে ভয়॥
হুকুম জাহির যার কোম্পানির ঘরে।
প্রতাপে বলদে বাঘে সঙ্গে পান করে॥
চাপড় হয়েছে হানা সে রানীর গায়।
ব্রাহ্মণেরা সবে জানে সাজা দিবে তাঁয়॥
এ ঘরের উলটা চাবি জানে না কারণ।
চাল-কলা-কড়ি-লোভী কলির ব্রাহ্মণ॥

Prev | Up | Next


Go to top