দ্বিতীয় খণ্ড - অনুরাগে কালীদর্শন
৯
আর এক উপসর্গ হৈল আচম্বিত।
গাত্রদাহ গোটাদিন বিরামরহিত॥
সূর্যোদয়ে দাহোদয় দাহর প্রকৃতি।
তত বাড়ে যত সূর্য হয় ঊর্ধ্বগতি॥
দ্বিতীয় প্রহর যবে যন্ত্রণাতিশয়।
মানুষের দেহে তাহা কখন না সয়॥
জাহ্নবীর জলে প্রভু অস্থির হইয়ে।
থাকিতেন প্রহরেক অঙ্গ ডুবাইয়ে॥
ভিজাইয়া বস্ত্রখণ্ড মস্তকাবরণ।
তথাপি তিলেক তার নহে নিবারণ॥
কভু অতি সুশীতল ঘরের মেঝায়।
কোমল শ্রীঅঙ্গ গোটা গড়াগড়ি যায়॥
কখন কি ভাবে প্রভু বুঝা বড় ভার।
কখন সাধনা আর কখন বিচার॥
কেশরী বিক্রমবল এক লক্ষ্যে মন।
বিচার আরম্ভ ল'য়ে কামিনী-কাঞ্চন॥
মূল পিশাচিনী দুটি বিষময় রূপ।
মানযশাকাঙ্ক্ষা যত সঙ্গিনীস্বরূপ॥
সঙ্গিনীরা দেহ-অঙ্গ মূলদ্বয় প্রাণ।
মূল নষ্টে সব নষ্ট প্রত্যক্ষ প্রমাণ॥
যেন উপসর্গগণ আপনিই থামে।
রোগীর উৎকট মূলব্যাধি-উপশমে॥
কামিনীরে লক্ষ্য করি করেন বিচার।
এত দেখি অপরূপ ভৌতিক ব্যাপার॥
দেহের কাঠাম-মাত্র অস্থিতে কেবল।
মাংস-অংশে শিরামধ্যে রক্ত-চলাচল॥
কফ-পিত্ত-মল-মূত্র বৈভব ইহার।
উপরে ছাউনি চালযুক্ত নব দ্বার॥
কোন দ্বারে যায় ভোগ্য শরীর-রক্ষণ।
কোন দ্বারে ভুক্ত-শেষ হয় নিগমন॥
ছোবান মলের তন্তু শিরখুলি ছাপা।
তাই দিয়া বেনাইয়া বাঁধিয়াছে খোঁপা॥
এই কামিনী নামে কি আছে ইহায়।
যাহাতে আনন্দময়ী মায়ে পাওয়া যায়॥
কামিনী রোগের গোড়া নাশের কারণ।
ইহাতে আমার কিছু নাহি প্রয়োজন॥