দ্বিতীয় খণ্ড - তান্ত্রিক-সাধনা
২
প্রভুর রকম কেহ বুঝিতে না পারে।
যা দেখে তাহায় তাঁরে ক্ষেপা জ্ঞান করে॥
মানুষের হয় যদি উন্মাদ-লক্ষণ।
ঔষধ তাহার পক্ষে নারী-সংঘটন॥
এমত ভাবিয়া যত আত্মীয়-স্বজনে।
ভাগিনা হৃদয়ে ডাকি কহে সংগোপনে॥
রূপসী যুবতী এক করিয়া সংগ্ৰহ।
তাঁহার সহিত শীঘ্র জুটাইয়া দেহ॥
হৃদয় সুযুক্তি বুঝে তাদের বচনে।
আনিল রূপসী এক প্রভুর কারণে॥
রাত্রিকালে থাকিতেন প্রভু যেই ঘরে।
গোপনে থাকিয়া হৃদু পাঠায় তাহারে॥
হাবভাব প্রকাশিয়া রূপসী হেথায়।
পাতিয়া মোহিনী-জাল প্রভু-পাশে যায়॥
বিষভরা কাল-সর্পী দেখি সন্নিকটে।
ভয়ার্ত পথিক প্রাণ চমকিয়া উঠে॥
প্রাণভয়ে যথাশক্তি পলাইয়া যায়।
তেমতি হইলা প্রভু দেখিয়া তাহায়॥
প্রভুর মহিমা-কথা শুন অতঃপর।
রূপসীর কিবা ভাবে দ্রবিল অন্তর॥
বিশুদ্ধ হইল চিত প্রভু-দরশনে।
গর্ভজাত শিশু যেন ভাবোদয় মনে॥
স্বকার্যে লজ্জিত কিন্তু দিব্যভাবোচ্ছ্বাসে।
বাৎসল্য-পূর্ণিত হৃদি আঁখিজলে ভাসে॥
এমন রূপসীপদে কোটি নমস্কার।
ভাগ্য মানি পদরজে কি ভাগ্য তাহার॥
প্রভু দেখি যে কেঁদেছে তিলেকের তরে।
তার সনে তুল্য কার ভুবন-মাঝারে॥
ধন্য রূপসীর রূপ যে রূপের বলে।
প্রভুতে বাৎসল্য-ভাব কুড়াইয়া পেলে॥
জয় জয় দয়াময় আমি মূঢ়মতি।
কি গাব তোমার লীলা কি ধরি শকতি॥
সামান্য কড়ির আশে আইল রূপসী।
কল্পতরুমূলে পায় মহারত্নরাশি॥
বালকস্বভাব প্রভু ইচ্ছাময় হরি।
অভাগার ভাগ্যে মাত্র হৈল কড়াকড়ি॥
বড় কড়াকড়ি প্রভু কৈলে মম-প্রতি।
শ্রীপদ-সেবায় রব এই দেহ মতি॥
পশ্চাৎ হৃদয়ে প্রভু কৈলা তিরস্কার।
এমন কুবুদ্ধি কেন হইল তোমার॥