দ্বিতীয় খণ্ড - তান্ত্রিক-সাধনা
৬
বৈষ্ণবে বড়ই কৃপা হইল প্রভুর।
বুঝিতে এখন বাকি আছেন মথুর॥
রঙ্গময় প্রভুদেব বুঝাইতে তাঁয়।
পরে কব প্রভু কিবা করিলা উপায়॥
অর্ধ হাত পরিমাণ জলের উপরে।
হেলে দুলে খেলে পদ্ম পবনের ভরে॥
কভু কভু উচ্চে কভু পরশিছে জল।
শিশুতে না বুঝে ইহা কাহার কৌশল॥
তেমনি মথুর দোলে না বুঝে কারণ।
খেলিছেন তাঁরে লৈয়া প্রভু নারায়ণ॥
দিবানিশি কাছে কাছে তথাপি অদৃশ্য।
শ্রীপ্রভুর লীলাখেলা সুগূঢ় রহস্য॥
বিষণ্ণ মলিন ভারি করি শ্রীবয়ান।
মথুর বিশ্বাসে কন প্রভু ভগবান॥
বল কি হইল মম হেতু নাহি জানি।
ভাবের লক্ষণ ইহা বলেন ব্রাহ্মণী॥
ঈশ্বরত্বে শ্রীপ্রভুর শাস্ত্রীয় নজির।
আর এক সাধারণে করিল জাহির॥
গাত্রদাহ-নিবারণে চেষ্টা নিরবধি।
কত কবিরাজী তেল কতই ঔষধি॥
অদ্যাবধি দাহ-ব্যাধি হইল না খুন।
সবার হয়েছে শূন্য উপায়ের তূণ॥
সাধিকা ব্রাহ্মণী তত্ত্ব কহিল সকলে।
ঈশ্বরানুরাগে দাহ ব্যাধি কেবা বলে॥
বিরহের দাহ ইহা শাস্ত্রে উল্লিখিত।
মহাভাবে শ্রীরাধার শ্রীঅঙ্গে ফুটিত॥
গোপীজ্ঞাপ্য রাগাত্মিকা গ্রন্থে হেন বিধি।
চন্দন ফুলের মালা কেবল ঔষধি॥
ব্রাহ্মণীর কথা শুনি সবে উপহাস।
বিশেষতঃ বর্তমানে মথুর বিশ্বাস॥
ব্রাহ্মণী বলেন উপহাস কি কারণ।
দেখ তিন দিনে ব্যাধি করি নিবারণ॥
এত বলি চন্দন-মোক্ষণ অঙ্গে করে।
গলায় ফুলের মালা দিয়া থরে থরে॥
সাধিকা ব্রাহ্মণী শুধু শাস্ত্রপাঠী নহে।
সেই সেই মত হয় যখন যা কহে॥
তিন দিনে ব্যাধি নষ্ট হৈল শ্রীপ্রভুর।
বিস্মিত সকলে রঙ্গে বিশেষে মথুর॥