Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - তান্ত্রিক-সাধনা

শিশুভাবাপন্ন প্রভু বালকের প্রায়।
সহজে বিশ্বাস তাঁর সবার কথায়॥
শ্রীমথুরে কহিবারে শুনেছে গোসাঁই।
বার বিনা আর অন্য অবতার নাই॥
এদিকে ব্রাহ্মণী দিয়া শাস্ত্রের প্রমাণ।
পণ্ডিতমণ্ডলীমধ্যে করেন বাখান॥
এত তেজে খণ্ডিতে শকতি নাহি কার।
প্রভুদেব শাস্ত্র বলে অসংখ্য অবতার॥
তাই প্রভু ভাবিছেন বটবৃক্ষতলে।
গৌরাঙ্গ কি অবতার ব্রাহ্মণী যা বলে॥
হেনকালে কি হইল শুনহ বারতা।
মহাতমবিনাশন রামকৃষ্ণ-কথা॥
একদিন প্রভুদেব ভাগীরথী-তটে।
শুনিলেন মহারোল কান যায় ফেটে॥
গঙ্গার মাঝারে উঠে দুফালিয়া জল।
অগণন মাতোয়ারা কীর্তনের দল॥
গায়ক বাদক যত কার নাহি হুঁশ।
নাচে গায় মাঝে দুটি সুন্দর পুরুষ॥
প্রভুদেব চিনিলেন প্রতি জনে জনে।
লোক যত একত্রিত আছিল কীর্তনে॥
উঠি তীরে তাঁহারে ঘেরিয়া কতক্ষণ।
নেচে গেয়ে পুনঃ জলে হইল মগন॥
জলবিম্ব উঠে যেন লয় হয় জলে।
তেমতি ডুবিল দল গঙ্গার সলিলে॥
গৌরাঙ্গাবতার কিনা শ্রীপ্রভুর মনে।
অসম্ভব সন্দ সমুদিত হৈল কেনে॥
বিশেষ কারণ আছে শুন শুন মন।
বিশ্বগুরুরূপে প্রভু ব্রহ্ম সনাতন॥
জীবহিত এক ব্রত সতত অন্তরে।
জৈবভাবে আচরণ জীবের উদ্ধারে॥
ভাবা চিন্তা করা কর্ম লীলার জীবনে।
এক লক্ষ্য আপনার উদ্দেশ্য-সাধনে॥
স্বেচ্ছায় সন্দেহযুক্ত মনে আপনার।
স্বেচ্ছায় করেন মুক্ত খেলিয়া আবার॥
যুক্ত মুক্তে যাহা হয় লীলা-আচরণ।
তাহে করে জগতের সন্দেহ মোচন॥
অবতারে হেন শক্তি বর্তমান রহে।
সৃষ্টি গোটা আজ্ঞা তাঁর নতশিরে বহে॥
কি চেতন কিবা জড় সকলে সমান।
প্রভুর লীলায় পাবে বহুল প্রমাণ॥
সূক্ষ্ম আধ্যাত্মিক শক্তি আবর্তনে যার।
ঘুরিতেছে চিরকাল সৃষ্টির সংসার॥
সে হেতু আচার্যরূপী অবতারগণ।
শিখিয়া শিখান জীবে উদ্ধার-কারণ॥
বিনাশিতে তমঃ-সন্দ লোচন-আঁধার।
চৈতন্য-আলোকে দেখে ইষ্ট আপনার॥
প্রবল পাশ্চাত্য-শিক্ষা এবে বর্তমানে।
জড়বাদী অবতার আদতে না মানে॥
রামে কৃষ্ণে যদ্যপি কাহারও কিছু ভক্তি।
গৌরাঙ্গাবতারে করে ভীষণ আপত্তি॥
তাই লীলাছলে করি গৌরাঙ্গ-দর্শন।
করিলেন জগতের সন্দেহ-ভঞ্জন॥

Prev | Up | Next


Go to top