Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - তান্ত্রিক-সাধনা

১২

রঙ্গপ্রিয় শ্ৰীমথুর রঙ্গরস চায়।
বৈষ্ণবে লিখিয়া দিল আসিতে ত্বরায়॥
যথাদিনে প্রভুসঙ্গে তান্ত্রিক ব্রাহ্মণ।
শ্যামার মন্দিরে করিলেন আগমন॥
টলটল গোটা অঙ্গ আবেশের ভরে।
চরণ যেমন তনু ধরিতে না পারে॥
মথুরের হেনকালে হৈল সংযোটন।
উপনীত সেইক্ষণে বৈষ্ণবচরণ॥
বিধির ঘটন কিবা যাই বলিহারি।
রামকৃষ্ণলীলা-কথা অমৃতলহরী॥
বৈষ্ণব দেখিয়া প্রভু হইলা কেমন।
হুঙ্কারিয়া স্কন্ধে তাঁর কৈলা আরোহণ॥
তান্ত্রিক ব্রাহ্মণ দেখে আঁখির উপরে।
দেবী চড়িলেন যেন বৈষ্ণবের ঘাড়ে॥
পদে নিপীড়িত ধূলা তাহার আকৃতি।
কালিমা-আঁধার-বর্ণ বারুদ যেমতি॥
অতিশক্তি ধরে কৈলে অগ্নি পরশন।
প্রভুর পরশে তেন বৈষ্ণবচরণ॥
সচেতন গোটা সৃষ্টি চৈতন্যের জোরে।
সাক্ষাৎ চৈতন্য সেই কাঁধের উপরে॥
হৃদয় চৈতন্যময় তাহার উচ্ছ্বাসে।
রচিয়া নূতন স্তোত্র অনর্গল ভাষে॥
চিত্রিত না হয় এই বিচিত্র দর্শন।
মহাভাবে সমাধিস্থ প্রভু নারায়ণ॥
উঠিছে জ্যোতির ছটা বদনমণ্ডলে।
সে যে কি অপূর্ব রূপ সাধ্য কার বলে॥
ছটা করে ছটাময় ছুটে যতদূর।
স্তম্ভিত বৈষ্ণব গৌরী আর শ্রীমথুর॥
বিস্ময়ে নীরব গৌরী তান্ত্রিক-ব্রাহ্মণ।
নব সুরচিত স্তোত্র করিয়া শ্রবণ॥
দূর হৃদিতম দেখি প্রভুর ব্যাপার।
দণ্ডবৎ হয়ে ভূমে লুটে বার বার॥
শ্রীপ্রভুর ভাবাবেশ ভঙ্গ হলে পরে।
হাসি হাসি শ্রীবয়ান কহিলা গৌরীরে॥
শুনেছ ব্রাহ্মণী কিবা মোর কথা বলে।
গৌরাঙ্গের অবতার নিতাইর খোলে॥
উত্তর-বচনে গৌরী কহে জোড়-করে।
তা বলিলে খাট করা হয় আপনারে॥
যে শক্তিসম্পন্ন হ'লে অবতার গণি।
আমি জানি আপনিই সে শক্তির খনি॥
পুনশ্চ বলেন প্রভু কি কথা তোমার।
যদ্যপি পণ্ডিতসঙ্গে করিয়া বিচার॥
সাব্যস্ত করিতে পার যা বলিলে তুমি।
তবে না তোমার কথা সত্য বলি আমি॥
দেখহ পণ্ডিত উপনীত বিদ্যমানে।
এত বলি দেখাইলা বৈষ্ণবচরণে॥
প্রভুর কৃপায় গেছে সিদ্ধাই তাহার।
নাহি তর্কবুদ্ধি, তর্ক কে করিবে আর॥
বসেছে বিশ্বাস ঘটে ফুটেছে নয়ন।
প্রভুদেবে বলিলেন তান্ত্রিক-ব্রাহ্মণ॥
বিচারে কি আছে কিছু বিচারের নাই।
যাহা বলিলাম আগে পুনঃ বলি তাই॥

Prev | Up | Next


Go to top