Prev | Up | Next

দ্বিতীয় খণ্ড - তান্ত্রিক-সাধনা

১৫

বিভীষিকা তন্ত্রব্রত শুনে ভয় পায়।
চিতাধূম-পানে কভু মত্ত প্রভুরায়॥
ছুটিতেন চারিদিকে ধূমের লাগিয়ে।
চিতাধূম লক্ষ্য করি মুখব্যাদানিয়ে॥
কখন ত্রিশূল হস্তে করিয়া ধারণ।
গঙ্গার কূলেতে হয় গম্ভীরে চলন॥
কখন কোমরে নারে ধরিতে বসন।
চাদর থাকিত মাত্র গাত্র-আবরণ॥
বাহ্যহীন হইলে চাদর যায় প'ড়ে।
ব্রাহ্মণী যতনে দেয় শ্রীঅঙ্গেতে বেড়ে॥
অপর উদ্দেশ্য নহে গাত্র-আবরণ।
শ্রীঅঙ্গে বাহির হয় চাঁদের কিরণ॥
পাছে কেহ লোকে দেখে এই অনুমানি।
চাদরে ঢাকিয়া অঙ্গ রাখেন ব্রাহ্মণী॥
সুন্দর অঙ্গের জ্যোতি চাদরে কি চাপে।
শিখারূপে নির্গমন প্রতি লোমকূপে॥
কখন কখন হয় জ্যোতির্ময় কায়া।
দাঁড়াইলে রোদে নাহি পড়ে দেহছায়া॥
দেখিয়া জ্যোতির রাশি প্রভুদেব কন।
প্রবেশহ দেহমধ্যে যতেক কিরণ॥
প্রবেশ অন্তরে মাগো বাহ্যে ভয় বাসি।
তবে না বিলয় দেহে কিরণের রাশি॥
ব্রাহ্মণী মায়ের চেয়ে সহায় সাধনে।
সযতনে সচকিত রহে রেতে দিনে॥
অনুভূতি দর্শনাদি কতই যে হয়।
সুমূর্খের সাধ্য কিবা দিবে পরিচয়॥
ছোট বড় কালীমূর্তি নাহি গণনায়।
আগোটা ব্রহ্মাণ্ডমধ্যে স্থান না কুলায়॥
দ্বিভুজা হইতে দশভুজার মূরতি।
রূপোজ্জ্বলে পরাজিত চন্দ্রিমার ভাতি॥
ধরনে গমনে শোভা সৌন্দর্য অশেষ।
কত মত কয় কথা দেয় উপদেশ॥
ষোড়শী ত্রিপুরামূর্তি কান্তি মনোহরা।
তুলনায় সৌদামিনী মলিনা আঁধারা॥
ভৈরবাদি দেবযোনি বিবিধপ্রকার।
বিভিন্ন স্বভাবযুক্ত বিভিন্ন আকার॥
ত্রিকোণ-আকারা জ্যোতির্ময়ী ব্রহ্মযোনি।
জগৎকারণ শক্তি সৃষ্টির জননী॥
অনির্বচনীয়া তিনি প্রসূতি প্রকাণ্ড।
পলে পলে প্রসবিছে অসংখ্য ব্রহ্মাণ্ড॥
অনাহত ধ্বনি অতি শ্রুতি-মুগ্ধকর।
ব্রহ্মাণ্ডের যাবতীয় একত্রিত স্বর॥
কুলাগারে জগদম্বা নিজে অধিষ্ঠান।
অণিমাদি অষ্টসিদ্ধি অশিব-নিদান॥
কুণ্ডলীর জাগরণ মূলাধার হোতে।
ঊর্ধ্বগতি পদ্মে পদ্মে সুষুম্নার পথে॥

Prev | Up | Next


Go to top