দ্বিতীয় খণ্ড - যোগ-সাধন
৬
একদিন যোগিবর ধুনি জ্বেলে ব'সে।
হেনকালে জনেক আগুন নিতে আসে॥
যেমন লইল অগ্নি তোতা দেখি তায়।
রাগেতে চিমটা ধরি তাড়া করি যায়॥
ক্রুদ্ধ দেখি যোগিবরে শালা শালা বলি।
বাহ্য কুপি প্রভুদেব দিলা তায় গালি॥
রূপ গুণ কার্য যদি মায়ার সৃজন।
কারে তবে কর ক্রোধ কারে আক্রমণ॥
সলজ্জবদন তোতা বাক্য নাহি সরে।
শুদ্ধমাত্র ঠিক বাত ঠিক বাত করে॥
বচনে মানিল মাত্র আপনার ভ্রম।
হৃদয় যেমন তাই পূর্বের মতন॥
সাকার শক্তিতে নাই কোনই বিশ্বাস।
বরঞ্চ শুনিলে কথা করে উপহাস॥
পঞ্চবটমূলে তোতা সাজাইত ধুনি।
তথায় কাটিয়া যায় আগোটা রজনী॥
সচৈতন্য সিদ্ধস্থান পঞ্চবটতল।
যে করে সাধনা তথা না হয় বিফল॥
ভৈরবে সে স্থান রক্ষা করে নিরন্তর।
তোতা রেতে কি দেখিল শুন অতঃপর॥
বিকটদর্শন সেই ভৈরব-আকার।
আগুনের কাছে বসে নিকটে তোতার॥
দেখি তোতা কহে তায় ত্রাসশূন্যকায়া।
তুমিও মায়ার চিত্র আমি যেন মায়া॥
সমুঝে সকল মায়া যাহা দেখে শুনে।
সাকার শক্তির কথা আদতে না মানে॥
শক্তির সম্বন্ধে প্রভু যত কন তায়।
মায়া মায়া বলি তোতা হাসিয়া উড়ায়॥
যদি প্রভু কোন দিন না করেন ধ্যান।
বলিতেন যোগিবর প্রভু-সন্নিধান॥
নিত্য প্রথামত ধ্যান না করিলে পরে।
পিতলের পাত্রসম মনে ম'লা ধরে॥
যোগিবরে শ্রীপ্রভুর উত্তর হইত।
পাত্র যদি হয় শুদ্ধ সুবর্ণে গঠিত॥
কেমনে ধরিবে ম'লা ওহে যোগিবর।
শুনি তোতা একেবারে মৌন নিরুত্তর॥
তথাপি না বুঝে তোতা প্রভু কোন্ জনা।
এক মনে শুন মন পশ্চাৎ ঘটনা॥