দ্বিতীয় খণ্ড - মধুরভাবে সাধনা
৯
এবে সাধনার কথা শুন দিয়া মন।
কিছু দিন পরে হইল কৃষ্ণ-দরশন॥
রাধা-মনোবিমোহন অপরূপ ঠাম।
নবীন-নীরদকান্তি ত্রিভঙ্গিম শ্যাম॥
মাথায় মোহন চূড়া বামভাগে হেলা।
মৃদুমন্দ সমীরণে দুলে করে খেলা॥
তিলকা-অলকাবলী কপালের তলে।
কনককুণ্ডল কানে দুলু দুলু দোলে॥
আকর্ণ পুরিয়া বাঁকা নয়নের টান।
কটাক্ষ-হিল্লোলে ছুটে সম্মোহন-বাণ॥
তিলফুল জিনি নাসা গজমতি তায়।
চঞ্চল আঁখির বেগে সুমন্দ দোলায়॥
মুখামৃতে সিক্ত দুটি রক্তিম অধর।
মনোদাসী হাসি যাহে খেলে নিরন্তর॥
কাঞ্চন-বলয় হাতে মোহন বাঁশরী।
রাধা রাধা গীত-স্বরে মন করে চুরি॥
দোলে গলে বনমালা সৌরভে আকুল।
গুনু গুনু রবে গুঞ্জে মধুপের কুল॥
নীলাভবরণ বক্ষঃ অতি সুশোভিত।
কুসুম-ভূষণসহ চন্দনে চর্চিত॥
কটিতটে গুঞ্জবেড়া পিঠে পীত ধটি।
পীতবাস পরিধানে অতি পরিপাটি॥
কনক-নূপুর শোভা করে রাঙা পায়।
সুমধুর রুনুঝুনু বাদ্য বাজে তায়॥
ভুবনমোহন রূপাকর কৃষ্ণরায়।
উদিয়া প্রভুর অঙ্গে অমনি মিশায়॥
যখন যে মূর্তি হয় প্রভুর গোচর।
শ্রীপ্রভুর দেহ যেন তাহাদের ঘর॥
আপনে আপনি প্রভু দেখেন এখন।
তিনিই শ্রীকৃষ্ণ নিজে রাধিকারমণ॥
ভাবাযুক্তে ভাবাতীতে সগুণ-নির্গুণে।
সাধনা মধুরভাবে ইতি এইখানে॥